রশিদুল ইসলাম রিপন, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের শিবেরকুটি গ্রামের সরেয়ারতলের ঘাট ও ময়দানের ঘাটের ৪ গ্রামের ১৪হাজার মানুষকে পারাপার করতে হচ্ছে ২টি বাঁশের সাকো দিয়ে।
দীর্ঘদিনের মানুষের দুর্ভোগের অবসান আর ভাগ্যের চাকা সচল করতে লালমনিরহাট জেলা সদর হতে মাত্র ৩ কিলোমিটার দুরের লালমনিরহাটের কুলাঘাট ইউনিয়নের শিবেরকুটি গ্রামের রত্নাই নদীর ২টি ব্রীজ নির্মাণে জোড়ালো দাবী তুলেছে সেখানকার ৪ গ্রামের মানুষ। লালমনিরহাট জেলা সদরের সর্ব পূর্বের ওই ইউনিয়নটি নদী বেষ্টিত জনপদ যা চরাঞ্চল নামে পরিচিত। লালমনিরহাট সদর উপজেলা কার্যালয় থেকে মাত্র ৩কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কৃষি ও মাছে সমৃদ্ধ ওই এলাকাটি পিছিয়ে শুধু অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে।
এখানকার বাসিন্দারা প্রধানত দুটি স্থান দিয়ে যাতায়াত করেন। একটি “সরেয়ারতলের ঘাট” হয়ে ধাইরখাতা, আরেকটি “ময়দানের ঘাট” হয়ে ভিতরকুটি বাঁশপচাই বিলুপ্ত ছিটমহল। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও সময়মতো পৌঁছতে পারে না। অথচ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে এখানে চরে গড়ে উঠতে পারে পর্যটন কেন্দ্র। কৃষিতে আসবে আরও সমৃদ্ধি। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় এখানে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় না। দূরের স্কুলে গিয়ে শিশুরা লেখাপড়া করে। নদীর উপর ব্রীজ ২টি হলে পাল্টে যাবে সেখানকার জনসাধারনের জীবনচিত্র।
এলাকাবাসী জানায়, শিবেরকুটি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে রত্নাই নদী। নদীর এপারে ৪টি (বনগ্রাম, শিবেরকুটি, দক্ষিণ শিবেরকুটি, বোয়ালমারী) গ্রাম আর ওপারে ভাটিবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, কুলাঘাট উচ্চ বিদ্যালয়, লালমনিরহাট আদর্শ ডিগ্রি কলেজ, পূর্ব সাপটানা উচ্চ বিদ্যালয়,
লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, লালমনিরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, লালমনিরহাট সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজ, লালমনিরহাট সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, লালমনিরহাট সদর ও জেলা শহর। ৪টি গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করছে। কৃষককে উৎপাদিত ফসল নিয়ে কিংবা রোগীকে চিকিৎসার জন্য ছুটতে হয় নদীর ওপারে। তাঁদের এই যাতায়াতের একমাত্র প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে রত্নাই নদী।
ওই এলাকার ভুক্তভোগীরা জানান, শিবেরকুটির সরেয়ারতল ঘাট এলাকার রত্নাই নদীর দুই পাড়েই পাকা সড়ক রয়েছে। এখন শুধু সেতু দরকার। বর্ষায় নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে অথবা ছোট নৌকা বা ভেলায় করে ভরা নদী পারাপার হতে ভয়ে থাকতে হয়। বিশেষ করে রাতের বেলা এ নদী পার হতে সবাই আতঙ্কে থাকে, কখন কে নদীতে পড়ে যায়।
কুলাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী বলেন, উপজেলা মাসিক উন্নয়ন ও সমন্বয় সভায় রত্নাই নদীর শিবেরকুটি সরেয়ারতল ঘাট সেতু নির্মাণের বিষয়টি একাধিকবার উপস্থাপন করা হলেও সেতু নির্মাণ না হওয়ায় শিবেরকুটিসহ নদীর এপারের ৪টি গ্রামের ১৪হাজার মানুষকে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।